চারিদিকে এত প্রাচুর্যে আমরা ভুলে যাই জীবনের কত সুন্দর মুহূর্ত গুলো আমরা অনুভব করতে পারি না…
হুমায়ুন বাবু পেরেছেন!
ইংরেজি
বহু অপমান সহ্য করে ইংরেজি শিখতে হয়েছিল মেয়েটিকে।
যার সঙ্গে বিয়ে হল, প্রথম ছ'মাস সে কিচ্ছু বলেনি
কিন্তু অফিসের পার্টি থেকে বেরিয়ে
রাত বারাটায় সে বলল, 'এখনও তোমার
on, of, at এগুলো ঠিক হল না।
মিসেস ভৌমিক হাসছিলেন।
মেয়েটি কোনও কথা বলেনি।
ছ'মাস বাদে গল্ফ ক্লাবের পার্টি,
কিন্তু মেয়েটি স্পষ্ট বাংলায় বলল, আমি যাব না
শুম হয়ে তার স্বামী চলে গেল একা।
ছ'মাস বাদে ক্যালকাটা ক্লাব
বিভূতিভূষণের উপন্যাস থেকে সে চোখ তুলে বলল, যাব না
ge
স্বামী রাগে জলন্ত সিগারেট চেপে ধরল
মেয়েটির পিঠে।
ছ'মাস বাদে এক সন্ধেবেলায় তার স্বামী
অনিন্দিতা নামে একটি মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরল
মেয়েটি একটাও বাংলা বলল না
ঝিঙেপোস্ত নিয়ে ঝরঝর করে ইংরেজি বলে গেল।
ছ'মাস বাদে যখন আর একটা পার্টি এসে গেল
বাড়ি ছেড়ে মেয়েটি পালাল
ছোট্ট চিঠি : আমি চললাম
যতদিন না, on, of, at ঠিক হচ্ছে কা
ততদিন বাড়ি ফিরব না ।
মেয়েটির সঙ্গে এরপর দেখা হলে বলতাম
ইংরেজরাই এখনো on, of, at নিয়ে কী করবে
ঠিক করতে পারল না
আর তুমি তো কোন ছার।
চলো বাড়ি ফিরে চলো।
কুষ্ঠব্যাধি - কায়েস আহমেদ
কই যাও চন্দ্রমোহন?
তোমার ক্ষ্যাত, তোমার পুষ্কুন্নী, তোমার
আম-জাম, কাঠাঁল, কলা, নারকেল ঘেরা
বাড়ি, উঠোন্ম হলুদ গাঁদা, নীল
সন্ধ্যামালতি, বাঁধানো তুলসী মঞ্চ,
গোয়াল ঘর, তোমার রাজ্যপাট
কালাইয়া রাইতের আন্ধারে
কই যাও? ক্যান
যাইতে হয়!
বক্কেশর পন্ডিতের কথা মনে পড়ে ?
দ্বাপর যুগ সমাপ্ত হইলে প্রজাপতি
ব্রক্ষ্মার পৃষ্ঠদেশে অধম্যের জন্ম হইল।
মিথ্যা হইল অধর্মের সহধর্মিনী।
দম্ভ তাহাদের পুত্র। দম্ভ আপন
সহোদরা মায়াকে বিবাহ করিল এবং
তাহাদের লোভ নামে এক পুত্র
জন্মগ্রহন করিল। লোভও
ভগিনীগমন করে, ফলত তাহাদের
ক্রোধ নামে এক পুত্র এবং হিংসা
নাম্নী এক কন্যার জন্ম হয়
মনে পড়ে চন্দ্রমোহন? বক্কেশর পন্ডিত
সেই কোনকালে চিতাখোলার ছাই
হইয়া পঞ্চভূতে মিশ্যা গেছে। কথা
মিশে নাই। মুনি ঋষিগো বাণী তো
জগতে রইয়া যায়।দম্ভ আর
মায়ার বিয়া আইজও হয়, লোভ
নামের পুত্রের জন্মও কেউ ঠেকাইতে
পারে না ।
তাই তো চন্দ্রমোহন।; রাইতের আন্ধারে
চৌদ্দ পরুষের ভিটা ছাইড়া নদীর
জলে চক্ষের জল মিশাইয়া নির্বাসনে
যাইতে হয়। ভাইস্যা যায়গো নদীর
জলে প্রতিমা ভাইস্যা যায়।
বড় দুঃখ চন্দ্রমোহন, বড় কষ্ট!
তবু মাটির বড় মায়া। রাইত নাই
দিন নাই মাথার ভিতরে বুকের ভিতরে
খালি পাড় ভাঙ্গে। নদী খালি
কল-কল-কল-কল কইরা বইয়া যায়।
চন্দ্রমোহন, মনে পড়ে আশ্বিন মাসের সেই পূজা!
ভরা বর্ষার আন্ধারে রাইতে মাঠ বিল
ভইরা লন্ঠনের আলো। কালো কালো
মানুষের হাতে ট্যাটা আর কোচ।
মাছ, জলের জিন বড় তড়পায়।
আহারে মাছ। সেই নদী মনে পড়ে
চন্দ্রমোহন? বর্ষার নদী। আশ্বিনের
নদী। কাশবন। শিতের পিঠা।
নবান্ন।মনে পড়ে।
তবে, কই যাও চন্দ্রমোহন? রাইতের আন্ধারে
রাজ্যপাঠ ছাইড়া কোন নির্বাসনে
যাও নদীর জলে চক্ষের জল মিশাইয়া।
চন্দ্রমোহন, ইংরাজ গেল, কিন্তু
তোমারে ক্যান নির্বাসনে যাইতে অয়।
দ্যাশ অইলো জননী। জননী ক্যান
সন্তান বিসর্জন দেয়।
’৭১ এর যুদ্ধের কথা মনে
পড়ে? মানুষের কি কষ্ট!
প্রাণের কি মায়া। লাখো লাখো
মানুষ। রক্ত। আগুন। ভয়।
কান্না। দীর্ঘশ্বাস!অতঃপর
স্বাধীন হইলো দ্যাশ। হাইরে স্বাধীন!
আমরা য্যান কোনো রাক্ষসের প্যাটের
মইদ্যে আছি। আমাগো চোখ,
নাই। শরীর নাই। কেবল
মাংসের তাল।হিংসা আর
লোভের তাল।
চন্দ্রমোহন, এখনো এতকিছুর
পরও ক্যান নিজের শিকড়ে টান
পড়ে। এখনো ক্যান নিজের শিকড়ে টান
পড়ে। এখনো ক্যান সন্ত্রস্ত
থাকতে হয় সদা, দ্যাশ তো স্বাধীন।
তবুও ক্যান তুমি হও ভীত।
কেবল এই জন্যে যে- তোমার
নাম চন্দ্রমোহন।
সেবন্তী ঘোষ । সৈনিকের ডায়েরিযুদ্ধ আমাদের কি শেখাল?—প্রতিদিন জীবন থেকে পিছিয়ে আসা?—যেভাবেমার্চপাস্ট আর ব্যারাকের জীবনে সমকাম আসে?—যেভাবে সীমান্ত নামেশূন্যতায় ঈশ্বরের দিকে বন্দুক উঁচিয়ে থাকে?— যেভাবে উন্মাদগ্রস্ত গুলি ছুটিয়েদেয় যে কারোর দিকে?একটু একটু করে বরফের নিচে রাত নেমে আসে, এমন আঁধারে পরস্পরকেচেনা যায় না, চিনতে চায়ও না। মর্ষকাম আর রুটি যেখানে অসার্থক, সেখানে কীকেউ কারো বন্ধু হতে পারে ?মুছে দেওয়া যেতে পারে কাল্পনিক রেখা। ভিজে শ্লেটে যেমন হালকা চক লেগেথাকে, কিছুতেই আমরা ভুলতে পারি না সীমান্ত নামে অশ্লীল শব্দটিকে। কেজানে ওপারেও কেউ শ্লেট মুছছে কি না?মেয়েরা এখানে টাটকা রুটির মতো। সিনেমায় যেমন দেখি প্রেম আর বারুদ যেনপাশাপাশি এখানে অপর্যাপ্ত রেশন, গ্রীষ্মের কঠিন বরফে হস্তমৈথুনেও সুখ নেই।হাতের তালুতে দাঁড়িয়ে পিঁপড়ে যেমন আদিগন্ত মাঠ দেখে, আমরাও বরফেরমধ্যে দেশ খুঁজি, বদলে ইয়েতির মতো ভূতেরা আসে, শহরে ফেরার পরআমাদের মাথা খারাপ হয়ে যায়।আমার কাছে দেশ মানে এক লোকের পাশে অন্য লোকঠিক যেখানে দিনের শুরু...ঠিক যেখানে দিনের শুরু অন্ধ কালো রাত্রি শেষমন যতদূর চাইছে যেতে ঠিক ততদূর আমার দেশঠিক যেখানে দিনের শুরু অন্ধ কালো রাত্রি শেষমন যতদূর চাইছে যেতে ঠিক ততদূর আমার দেশএই কাটাতার জঙ্গী বিমান এই পতাকা রাষ্ট্র নয়দেশ মানে বুক আকাশ জোড়া ইচ্ছে হাজার সূর্যোদয়এই কাটাতার জঙ্গী বিমান এই পতাকা রাষ্ট্র নয়দেশ মানে বুক আকাশ জোড়া ইচ্ছে হাজার সূর্যোদয়..................এ মানচিত্র জ্বলছে জ্বলুক এই দাবানল পোড়াক চোখআমার কাছে দেশ মানে এক লোকের পাশে অন্য লোকএ মানচিত্র জ্বলছে জ্বলুক এই দাবানল পোড়াক চোখআমার কাছে দেশ মানে এক লোকের পাশে অন্য লোক........ঠিক যেখানে দিনের শুরু...ঠিক যেখানে দিনের শুরু অন্ধ কালো রাত্রি শেষমন যতদূর চাইছে যেতে ঠিক ততদূর আমার দেশ..............#kobita #bangla_kobita #abritti #Bengali_Poetry #abritti #আবৃত্তি #kobita_bangla #কবিতা #কবিতা_আবৃত্তি #বোহেমিয়ান #stopwar #bengalirecitation #audiostorybengali#ArijitBanik উচ্চারন - অরিজিৎ বনিকRecitation - Arijit Banik
নুর ভাই গ্রেফতার আজ☝🏾আজ, নাটকের পর্দা থেকে বাস্তবের এক নির্মম মঞ্চে দাঁড়িয়ে আছি আমরা। বাকের ভাই, যিনি ছিলেন আমাদের সাহস, আমাদের প্রতিবাদের প্রতীক, তার বাস্তব রূপ নুর ভাই আজ বন্দী। জীবনের এমন পরিহাস, যেখানে একসময় একটি চরিত্রের জন্য মানুষ রাস্তায় নেমেছিল, আজ হয়তো সেই বাস্তব নায়কের জন্য আর কেউ নামবে না। কিন্তু স্মৃতি থেকে মুছে ফেলা যায় না সেই মানুষটিকে, যিনি আমাদের হৃদয়ে এক অভূতপূর্ব ভালোবাসা আর সাহস বুনেছিলেন।যে চরিত্রটি ছিল একসময় কল্পনা, আজ তার জীবনের গল্প হয়ে উঠেছে বাস্তবের এক তীব্র সত্য। জীবনের এই নির্মম সত্যের মাঝে দাঁড়িয়ে আজ এই কবিতার কথা খুব মনে পড়ছে। মনে হচ্ছে, এই শব্দগুলোই সবচেয়ে ভালোভাবে প্রকাশ করবে আমাদের মনের গভীরতম অনুভূতি।মুনাকে লিখা বাকের ভাইয়ের শেষ চিঠি!যদিও ছিলো মাত্র একটা নাটক কিন্তু আজও মুনার কথা মনে পড়লে খারাপ লাগে!এই চিঠির আবেগ একমাত্র তারাই বুঝতে পারবে যারা বাকের ভাই চরিত্রটা চিনে,"কোথাও কেউ নেই" নাটকটি দেখেছে।প্রিয় মুনা, কেমন আছো? আমিও ভালো আছি। ইহকালে নামায-রোজা তেমন রাখি নাই!রমজান মাসেও লুকাইয়া লুকাইয়া চা-বিড়ি খাইছি!সুযোগ পাইলেই এরে ওরে হালকা মালিশ কইরা দিছি। কিন্তু আমি ম/রার পর তুমি নাকি দুই হাত তুইলা ম/রা কান্না কান্দো? যদিও Excess crying is very bad! কিন্তু তোমার দোয়া বড় সাংঘাতিক! ইহকালে টর্চার কইরা আসলেও পরকালে কেউ আমারে টর্চার করতেছে না। তুমি এতো কান্দো ক্যান মুনা? এবার একটা বিয়া করো,সংসার করো। তোমারে কইছিলাম না?মাইরে ভিটামিন আছে। মাইরে কোন ভিটামিন নাই মুনা,ভিটামিন আছে প্রেমে,সংসারে! ফাঁ/সি নিয়া আমার তেমন কোন দুঃখ নাই। অন্য কাউরে খু/ন না করলেও, তোমার মন রে আমি খু/ন করছি। Mind Murder, Big Murder! আগে বুঝি নাই মুনা।তোমারে স্নেহ কইরা একটা আবদার করি;এই দুনিয়া বড় উত্তম জায়গা, বাকেরের চিন্তা করার মতো ফালতু কাজ এইখানে মানায় না। যহন ছিলাম, তহন ছিলাম,এহন তো নাই! না থাকা জিনিস আর কতদিন সাজায় রাখবা, মুনা! ভুইলা যাওয়ার ফার্স্ট স্টেপ হইল পারডন করা! মেয়ে লোক সব পারে, কিন্তু সহজে পারডন করতে পারেনা৷ আমারে তুমি পারডন কইরো মুনা! " হাওয়া মে উড়তা যায়ে" গান না গাইয়া, একটা লাল দোপাট্টার মতন আমারে তুমি উড়ায়া দিও মুনা। আমারে তুমি উড়ায়া দিও! ইতি,বাকের ভাইলেখা: হুমায়ূন আহমেদ🌼ছবি:সংগৃহীত
কবিতা - এই অবেলায়
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
ওই যে গোলাপ দুলছে, ও কি ফুল না আগুন, ঠিক বুঝি না।
এগিয়ে গিয়ে পিছিয়ে আসি, ভাবতে থাকি ধরব কি না।
ভাবতে থাকি, ঠিক কতবার ফুলের বনে ভুল দেখেছি।
ভরদুপুরে গোলাপ ভেবে অগ্নিশিখায় হাত রেখেছি।
গোলাপ, তুমি গোলাপ তো ঠিক?
হও যদি সেই আগুন, তবে এই অবেলায় ফুলের খেলায় ফের যে আমায় পুড়তে হবে।
#kobita #bangla_kobita #abritti #Bengali_Poetry #abritti #আবৃত্তি #kobita_bangla #কবিতা #কবিতা_আবৃত্তি #বোহেমিয়ান
সর্বহারা অবিশ্বাসী
আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর স্ত্রী, বেশ সেজেগুজে এসেছে
কিন্তু আমাদের সঙ্গে খেতে বসবে না
আজ তার নীলষষ্ঠী
যৌবন বয়েসে এই নিয়ে কত না চটুল রঙ্গ করতাম
এখন শুধু একটা পাতলা হাসি,
অন্যের বিশ্বাসে নাকি আঘাত দিতে নেই
আর এক বন্ধু, যে প্রথম আমায় ছাত্র রাজনীতিতে টেনেছিল
তার আঙুলে দেখি একটা নতুন পাথর-বসানো আংটি
আমার কুঞ্চিত ভুরু দেখে সে দুর্বল গলায় বলল
শরীরটা ভালো যাচ্ছে না,
তাই শাশুড়ি এটা পরতে বললেন, মুনস্টোন
না বলা যায় না
আমার মনে হল, এ যেন আমারই নিজস্ব পরাজয়!
শ্রদ্ধেয় অধ্যাপকের বাড়ি, মাঝে মাঝে যাই তাঁর আলাপচারী শুনতে
এখনও কত কিছু শেখার আছে
আজই প্রথম দেখলাম, তাঁর দরজায় পেছন দিকে,
গণেশের মূর্তি আটকানো
প্রশ্ন করিনি, তিনি নিজেই জানালেন,
দক্ষিণ ভারত থেকে ছেলে এনেছে, কী দারুণ কাজ না?
সুন্দর মূর্তির স্থান শো-কেসের বদলে দরজার ওপরে কেন
বলিনি সে কথা, সেই ফক্কুড়ির বয়েস আর নেই
বয়েস হয়েছে তাই হেরে যাচ্ছি, অনবরত হেরে যাচ্ছি
অন্যের বিশ্বাসে আঘাত দিতে নেই, অন্যের বিশ্বাসে আঘাত দিতে নেই
চতুর্দিকে এত বিশ্বাস, দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে কত রকম বিশ্বাস
যে গেরুয়াবাদী ঠিক করেছে, পরধর্মের শিশুর রক্ত
গড়াবে মাটিতে, চাটবে কুকুরে
সেটাও তার দৃঢ় বিশ্বাস
ধর্মের যে ধ্বজাধারী মনে করে, মেয়েরা গান গাইলে গলার নলি
কেটে দেওয়া হবে
টেনিস খেলতে চাইলেও পরতে হবে বোরখা
সেটাও তার দৃঢ় বিশ্বাস
যে পেটে বোমা বেঁধে যাচ্ছে ধ্বংসের দিকে
যে পেশি ফুলিয়ে, দেঁতো হাসি হেসে
পদানত করতে চাইছে গোটা বিশ্বকে
এরা সবাই তো বিশ্বাসীর দল
সবাই বিশ্বাসী, বিশ্বাসী, বিশ্বাসী…
এক একবার ভাঙা গলায় বলতে ইচ্ছে করে
অবিশ্বাসীর দল জাগো
দুনিয়ার সর্বহারা অবিশ্বাসীরা এক হও!
রাস্তা কারও একার নয়
-বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
ধর্ম যখন বিজ্ঞানকে বলে রাস্তা ছাড়ো!’ বিজ্ঞান কি রাস্তা ছেড়ে দেয়? পোপের ভয়ে দেশান্তরী হয়েছিলেন লিওনার্দো দা ভিঞ্চি। সারাদিন একটা অন্ধকার ঘরের মধ্যে পায়চারি করতেন গ্যালিলিও গ্যালিলেই ; তাঁকে পাহাড়া দেবার জন্য বসে থাকতো একজন ধর্মের পেয়াদা, যার চোখের পাতা বাতাসেও নড়তোনা। বিজ্ঞান কি তখন থেমে ছিল? তীর্থের পাণ্ডাদের হই হই, তাদের লাল চোখ কি পেরেছিল পৃথিকে বেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে, সূর্যকে তার চারদিকে ওঠবোস করাতে? ধর্ম যতদিন দুঃখী মানুষকে বেঁচে থাকার সাহস দেয়, ততদিন রাস্তা নিয়ে কারও সঙ্গে তার ঝগড়া থাকে না। রাস্তা কারও একার নয়। বরং তাকেই একদিন রাস্তা ছাড়তে হয়, যার স্পর্ধা আকাশ ছুঁয়ে যায়। বিজ্ঞান যখন প্রেমের গান ভুলে ভাড়াটে জল্লাদের পোশাক গায়ে চাপায়, আর রাজনীতির বাদশারা পয়সা দিয়ে তার ইজ্জত কিনে নেয়, আর তার গলা থেকেও ধর্মের ষাঁড়েদের মতােই কর্কশ আদেশ শোনা যায় : ‘রাস্তা ছাড়ো! নইলে – পৃথিবীর কালো সাদা হলুদ মানুষের গান, তাদের স্বপ্ন এক মুহূর্ত সেই চিঙ্কার শুনে থমকে তাকায়।তারপর যার যেদিকে রাস্তা, সেদিকে মুখ করেই তারা সামনে, আরও সামনের দিকে এগিয়ে যায়।কেউ কারোকে রাস্তা ছেড়ে দেয় না, যতদিন এই পৃথিবীতে গান থাকে, গানের মানুষ থাকে, স্বপ্ন থাকে..#kobita #bangla_kobita #abritti #Bengali_Poetry #abritti #আবৃত্তি #kobita_bangla #কবিতা #কবিতা_আবৃত্তি #বোহেমিয়ান #bengalirecitation #audiostorybengali#ArijitBanik
উচ্চারন - অরিজিৎ বনিকRecitation - Arijit Banik
একেক দিন খুব দুঃখ হয়তারাপদ রায়একেক দিন হাতে কোন পয়সা নেই বলেখুব দুঃখ হয়,চারপাশে সবাইকে কেমন সচ্ছল মনে হয়।একেক দিন শরীর ভালো নেই বলেখুব দুঃখ হয়,চারপাশে সবাইকে কেমন সহজ, সুস্থ মনে হয়।একেক দিন ভালোবাসার জন্যে দুঃখ হয়।একেক দিন ভালো না বাসার জন্যে দুঃখ হয়।একেক দিন কোন বন্ধু নেই বলে,একেক দিন কোন শত্রু নেই বলে,একেক দিন প্রশংসা শুনিনি তাই,নিন্দাও শুনিনি তাই,একেক দিন খুব দুঃখ হয়।
সে ব্রত চক্রবর্তী অনেকদিন পরে দেখা। আমার প্রথম ভালবাসা। এখন অন্যের গৃহিণী হয়েছে।কাহিনী খুব মামুলী, যা দিয়ে আমার নিজস্ব খরচে রিল চারেকের একটাতথ্যচিত্রও হবে না। আমি যখন ওকে ভালোবাসতে শুরু করলুম, তখন ও অন্যএকজনকে তুমুলভাবে ভালোবাসছে। বিয়ে করল তাকেই। তারপর এই দেখা।কবিতা ও ছবির প্রদর্শনী একটি বাড়িতে, আমন্ত্রিতদের মধ্যে আমিও একজন।কবিতার সঙ্গে ছবি (কবিতার বিষয় নিয়ে) এ প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখছিলুম। মুখভুলে হঠাৎ দেখি কয়েকহাত দূরে শ্রোতাদের মধ্যে ও বসে আছে আমার দিকেচেয়ে। লোভ নয়, রাগ-ক্ষোভ নয়, দুঃখ বা হাহাকার নয়, ওকে দেখে অদ্ভুতএক প্রশান্তি ছড়িয়ে পড়ল শরীর মনে। ক'বছর আগে কত জরুরী কথা ছিলওর সঙ্গে, সকাল বিকাল তখন ওর জন্যই রাশি রাশি কথা জন্ম নিত আমারভেতর। আর এখন 'ভালো থেকো' দুটি শব্দ উচ্চারণ করেই, ফের মনোযোগীহয়ে পড়লুম বক্তৃতায়। শ্রোতারা অপেক্ষা করে আছে। বক্তৃতা শেষ করে উঠেআসার সময় আমার হঠাৎ মনে হল, ভালোবাসা ফুরিয়ে গেলেও যা থাকে,তা আসলে একধরণের ভালোবাসাই। শেষেরটাও নদী, তবে জোয়ারের নয়,ভাটার।উচ্চারণ- অরিজিৎ বনিক
হিমযুগসুনীল গঙ্গোপাধ্যায় শরীরের যুদ্ধ থেকে বহুদূর চলে গিয়ে ফিরে আসি শরীরের কাছেকথা দিয়েছিলে তুমি উদাসীন সঙ্গম শেখাবে...শিশিরে ধুয়েছো বুক, কোমল জ্যোৎস্নার মতো যোনিমধুকূপী ঘাসের মতন রোম, কিছুটা খয়েরিকথা দিয়েছিলে তুমি উদাসীন সঙ্গম শেখাবে।আমার নিশ্বাস পড়ে দ্রুত, বড়ো ঘাম হয়, মুখে আসে স্তুতি নিেকথা দিয়েছিলে তুমি উদাসীন সঙ্গম শেখাবে-নয় ক্রুদ্ধ যুদ্ধ, ঠোঁটে রক্ত, জঙ্ঘার উত্থান, নয় ভালোবাসাভালোবাসা চলে যায় একমাস সতেরো দিন পরঅথযা বৎসর কাটে, যুগ, তবু সভ্যতা রয়েছে আজও তেমনি বর্বরতুমি হও নদীর গর্ভের মতো গভীরতা, ঠাণ্ডা, দেবদূতীকথা দিয়েছিলে তুমি উদাসীন সঙ্গম শেখাবে।মৃত শহরের পাশে জেগে উঠে দেখি আমি প্লেগ, পরমাণুকিছু নয়,স্বপ্ন অপছন্দ হলে পুনরায় দেখাবার নিয়ম হয়েছেমানুষ গিয়েছে মরে, মানুষ রয়েছে আজও বেঁচেভুল স্বপ্নে ; শিশিরে ধুয়েছো বুক, কোমল জ্যোৎস্নার মতো যোনিতুমি কথা দিয়েছিলে...এবার তোমার কাছে হয়েছি নিঃশেষে নতজানুকথা রাখো! নয় রক্তে অম্বক্ষুর, স্তনে দাঁত, বাঘের আঁচড় কিংবাউরুর শীৎকারমোহমুদ্গরের মতো পাছা আর দুলিও না, তুমি হৃদয় ও শরীরের ভাষ্যনও, বেশ্যা নও, তুমি শেষবারপৃথিবীর মুক্তি চেয়েছিলে, মুক্তি, হিমযুগ, কথা দিয়েছিলে তুমিউদাসীন সঙ্গম শেখাবে ৷৷উচ্চারন - অরিজিৎ বনিক
আত্মীয়তা বাঘের মতনপ্রবালকুমার বসুআমার কোনও আত্মীয় নেই, কিন্তু অনেকের সঙ্গেই রয়েছে জানাশোনাএদের কেউ কেউ আমার আত্মীয় হতে পারতকেউ কেউ আত্মীয় বলে দাবিও করেআমি সব সময়ই এদেরকে বোঝাতে চেয়েছিজানাশোনা থাকলেই যে আত্মীয় হবেবা আত্মীয় হলেই যে জানাশোনা থাকবেএমন কোনও সরলরৈখিক জ্যামিতি মেনেসম্পর্ক নির্ধারিত হয় নাযেমন কোনও নদী সঙ্গে নিয়ে আসবে জোয়ারকোনও নদী চলতে চলতে কখন যাবে হারিয়েতার যেমন কোনও পাটিগণিত হয় নাতেমন আত্মীয়তারও নির্দিষ্ট সংজ্ঞা বলে কিছু নেইতবু কেউ কেউ কাউকে কাউকে ভাবে আত্মীয়আরও কেউ কেউ আরও কাউকে কাউকে ভাবে আত্মীয়ের অধিককেউ কেউ ভাবে কারও কারও সঙ্গে রয়েছে জানাশোনাকারও কারও জানাশোনা থেকে তৈরি হয় আত্মীয়তাকারও কারও কুকুর বেড়ালের সঙ্গে আত্মীয়তা হয়কারও কারও কাঠবিড়ালী বা খরগোশের সঙ্গেকারও কারও জানাশোনা পাশাপাশি দীর্ঘদিন থেকে যাওয়াদুটো গ্যালাক্সির মতনকেউ কারও দিকে একটুও এগিয়ে আসতে পারে নাআমার অনেক জানাশোনা সত্ত্বেওআত্মীয়ের মতন কাউকে দেখলে সতর্ক হয়ে পড়িআমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় দেখেছিআত্মীয়তা বাঘের মতন,একবার ধরলে না-খেয়ে ছাড়বে না Kinship, Like a Tiger Prabal Kumar BasuI have no relatives, but I know many people. Some of them could have been my kin. Some even claim they are. I’ve always tried to make them understand: Just because you know someone Doesn’t mean they’re kin, And being kin doesn’t guarantee knowing. No straight-line geometry Maps out our relationships.Just as a river might bring the tide, Another may slip away while flowing— There’s no set arithmetic to that. Likewise, there’s no fixed definition Of kinship. Yet some consider certain people kin, Others cherish some as more than kin, Still others believe they merely know someone— And sometimes, from that knowing, kinship grows.Some find kinship with dogs or cats, Others with squirrels or rabbits. Some acquaintances stay side by side forever Like two galaxies, Unable to move any closer.Despite my many acquaintances, I grow cautious when I sense someone acting like kin. From long experience, I have learned: Kinship is like a tiger— Once it seizes you, It will never let you go unfed.#kobitastatus #bangla_kobita #abritti #Bengali_Poetry #abritti #আবৃত্তি #kobita_bangla #কবিতা #কবিতা_আবৃত্তি #artprocess #bengalirecitation#ArijitBanik উচ্চারন - অরিজিৎ বনিকRecitation - Arijit Banik
"কুর্চি,
তোমার চিঠি হঠাৎ এই শীতের সকালে এক রাশ উষ্ণতা বয়ে আনলো। পাতা ঝরে যাচ্ছে সামনের শালবনে। বিবাগী হচ্ছে ভোগী। রিক্ততার দিন আসছে সামনে। এরই মধ্যে তোমার চিঠি যৌবনের দুতীর মতো; এলো এক ঝাঁক টিয়ার উল্লাসী সমবেত সবুজ চিৎকারের মতো। দুর্বোধ্য আপাত। কর্কশ শব্দমঞ্জরীও কী দারুন মুগ্ধতা বয়ে আনে কখনো কখনো, কী দারুন ভাবে সঞ্জীবিত করতে পারে অন্যকে।
তাই নয়?
তার মানে এই নয় যে- তোমার চিঠি দুর্বোধ্য। উপমার খুঁত ক্ষমা করে দিও।
কেমন আছ তুমি? জানতে চাইলেও জানতে পাই কই?
সকাল থেকেই তোমাকে আজ খুব সুন্দর একটা চিঠি লিখতে ইচ্ছে করছিল। ঘুম ভাঙ্গার পর থেকেই তোমার কথা মনে পড়ছিল খুবই। আজকে ঘুম ভাঙ্গলো বড় এক চমকে। এক জোড়া পাখির ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো। যে পাখিদের ডাক বড় একটা শুনিনি এদিকে। কম্বল ছেড়ে দৌড়ে বাইরে গিয়ে দেখি- এক জোড়া স্কারলেট মিনি-ভেট এসে বসেছে আম গাছের মাথায়। আমার ঘুম ভাঙ্গা নিয়ে পাখিরা। আহা! রোজই যদি আসতো। আর তারপরই তোমার এই চিঠি। দিন আজকে ভালো যাবে আমার।
বলছিলাম যে, সকাল থেকেই তোমাকে সুন্দর একটি চিঠি লিখবো ভাবছিলাম। কিন্তু সুন্দর সুখের যা কিছু ইচ্ছা তা দমন করার মধ্যেও বোধহয় এক ধরনের গভীরতর সুখ নিহীত থাকে। থাকে না?
আজ চিঠি লিখবোনা তোমাকে। তার বদলে একটি স্বপ্নহার পাঠাচ্ছি, লেখক কবি না। তবুও তার নাম গোপন থাক। কল্পনা করেই খুব লাগছে যে, তুমি আমার চিঠি কোলে নিয়ে বসে আছ, জানালার পাশে। যে মানুষটি তোমার মিষ্টি-গন্ধ কোলের গন্ধ পায়নি কখনও, পাবেও না কোনদিন, তার চিঠি সেই পরশে গর্বিত হয়ে উঠেছে যে, এই ভেবেই কত সুখ।
কি যে দেখেছিলাম তোমার ঐ মুখটিতে কুর্চি। এত যুগ ধরে কত মুখইতো দেখলো এই পোড়া চোখ দু’টি। কিন্তু, কিন্তু এমন করে আর কোনো মুখ’এইতো আমার সর্বস্বকে চুম্বকের মত আকর্ষণ করেনি। ভালো না বাসলেই ছিল ভালো। বড় কষ্টগো ভালোবাসায়। ভালো তো কাউকে পরিকল্পনা করে বাসা যায় না। ভালোবাসা হয়ে যায়, ঘটে যায়। এই ঘটনার ঘটার অনেক আগের থেকেই মনের মধ্যে প্রেম পোকা কুরতে থাকে। তারপর হঠাত’ই এক সকালে এই দুঃখ সুখের ব্যাধি দূরারোগ্য ক্যান্সারের মতই ধরা পড়ে। তখন আর কিছুই করার থাকে না। অমোঘ পরিণতির জন্যে অশেষ যন্ত্রনার সংগে শুধু নীরব অপেক্ষা তখন।
কেউই যেনো কাউকে ভালো না বাসে। জীবনের সব প্রাপ্তিকে এ যে অপ্রাপ্তিতেই গড়িয়ে দেয়। তার সব কিছুই হঠাৎ মূল্যহীন হয়ে পরে। যাকে ভালবাসে তাকে নইলে তার আমিত্বই অনস্তিত্বে পৌঁছায়। হুঁশ থাকলে এমন মুর্খামি কেউ কি করে? বল? সেই জন্যই বোধহয় হুঁশিয়ারি মানুষদের কপালে ভালবাসা জোটে না। যারা হারাবার ভয় করে না কিছুতেই, একমাত্র তারাই ভালবেসে সব হারাতে পারে। অথবা, অন্য দিক দিয়ে দেখলে মনে হয়, যা-কিছুই সে পেয়েছিল বা তার ছিল; সেই সমস্ত কিছুকেই অর্থবাহী করে তোলে ভালবাসা। যে ভালবাসেনি, তার জীবনও বৃথা!
তবুও… বড় কষ্ট ভালবাসায়!
কুর্চি দেখি কি করতে পারি তোমাদের সাথে বেড়াতে যাবার। ইচ্ছে তো কত কিছুই করে। এই জীবনে ক’টি ইচ্ছে পূর্ণ হলো বলো? কারই’বা হয়? এমনিতে আমার অনেক কষ্ট। এমন করে ডাক পাঠিয়ে আর কষ্ট বাড়িওনা। একা একা মজা করতেও বিবেকে লাগে। যার বিবেক বেঁচে থাকে, তার সুখ মরে যায়। সুখী হবার সহজ উপায় বিবেকহীন হওয়া। বিবেক বিবশ হলেই বাঁচি।
ভালো থেকো,
তোমার পৃথু দা"
(মাধুকরী)
কুর্চিকে পৃথু'দার চিঠি - বুদ্ধদেব গুহর 'মাধুকরী' উপন্যাস থেকে পাঠ
উপন্যাসঃ মাধুকরী
রচনা: বুদ্ধদেব গুহ
কণ্ঠ ও নির্মাণ: অরিজিৎ
দেবীজন্ম
- মন্দাক্রান্তা সেন
যে ছেলেটি আমার মনের মতো নয়
সে যদি আমার বুকে মাথা রাখে, বুক খসে যাবে ?
ভেবেছি অনেক বার, তবু, সে যখন কাছে আসে,
পাগলের মতো শুধু ছুঁতে চায় মুহূর্তের প্রেমে,
আমারও কেমন লাগে।
আমি জানি। এইসব কষ্ট জানি। ছোঁওয়া জানি।
ছুঁতে চেয়ে থেঁৎলে যাওয়া জানি।
যখন ইষৎ দূরে বসে থাকে আমার মনের মতো ছেলে,
আমি তো এমনই করি,
মাথা খুঁড়ি পাথরে, শরীরে!
সে কবে আদর করবে, শুরু হবে মানুষ জন্মের
ততদিন---প্রেম নয়, আমি কোনও করুণার দেবী . . .
#kobita #bangla_kobita #abritti #Bengali_Poetry #abritti #আবৃত্তি #kobita_bangla ছবি - নীলাঞ্জনা চক্রবর্তী উচ্চারন - অরিজিৎ বনিক
#kobita #bangla_kobita #abritti #Bengali_Poetry #abritti #আবৃত্তি #kobita_bangla ছবি - নীলাঞ্জনা চক্রবর্তী উচ্চারন - অরিজিৎ বনিক
ছবি - নীলাঞ্জনা চক্রবর্তী উচ্চারন - অরিজিৎ বনিক নিজের কাছে ফেরা কতকাল ভালোবাসা হয় না নিজেকে ! অথচ যে মানুষটা উধাও হলো একলা রেখে, তার জন্য বুকের ভেতর কান্না জমে, রাত্রি জানে ঘুম জমে না চোখের পাতায়, যন্ত্রণাতে! কই, এই আমি তো আমায় ছেড়ে যাই নি কোথাও! দুঃখ দিই নি ! ওই যে মানুষ দুঃখ দিল, ভাসিয়ে দিল অথৈ জলে। যার জন্য হৃদয় জানল, বিষাদ ছাড়া চোখের কোনো ভাষা হয় না । কান্না ছাড়া এই জনমে ভালোবাসা হয় না। তার জন্য তবু কেন বুক ভাঙল ? গভীর রাতে গহিন কোথাও কুহক ডাকল! এবার খানিক সময় পেলে গুছিয়ে নেব। কান্না এবং হাসিটুকু নিজের থাকবে। নিজের জন্য মেঘ থাকবে, রোদ থাকবে। উদাস দুপুর, পদ্মপুকুর নিমগ্নতায় চুপ থাকবে । ইচ্ছেমতো এই আমাকেই ভালোবাসব। ভালো বাসতে বাসতে অন্য মানুষ, আজ কতকাল ভালোবাসা হয় না নিজেকে! আর কতকাল, দুঃখ এবং দহন পুষব ভালোবাসতে ? এবার আমি ভালোবাসব এই আমাকে । আর কতকাল, অনুভূতির মৃত্যু হবে, বুকের কোনার হিমঘরেতে সারি সারি কফিন থাকবে! এবার তবে অন্ধকারে আলো জ্বলুক, বলুক হৃদয়—মেঘলা দুচোখ আলোয় ভাসতে, অনেকটা পথ হেঁটে এসে শিখব এবার সত্যি সত্যি ভালোবাসতে!
Sketch - Nilanjana Chakraborty Vocal - Padmamouliswar Aditya Recitation - Arijit Banik কন্ঠ - পদ্মমৌলিশ্বর আদিত্য ছবি - নীলাঞ্জনা চক্রবর্তী উচ্চারন - অরিজিৎ বনিক আমি চাইতাম প্রতিদিন অন্তত দশ মিনিটের জন্য আমাদের দেখা হোক, মাঠ পেরিয়ে হাত ধরাধরি করে অন্তত একবার রেললাইন পার হতে হবে,বৃষ্টিতে ভিজতে হবে,রাত জেগে ফোনে কথা বলতে হবে। তুমি চেয়েছিলে আমাদের একটা সংসার হোক, ছোট্ট রান্নাঘর, শোবার ঘরে দক্ষিনের জানালা, বিকেল বেলায় জানালায় চোখ এলিয়ে আড়াইশো গ্রাম হলুদ,এক কেজি পেয়াঁজ,চারটে ডিমের ফর্দ লেখা । তোমার চাওয়া দেখে আমিও বিপ্লবী হয়ে গেলাম, কিছু একটা করতে হবে বলে রেসের ঘোড়ার মতো ছুটতে লাগলাম। ছুটতে ছুটতে আমি এখন অনেক দূরে, আমার আশেপাশে তোমাকে খুঁজে পাচ্ছিনা কোথাও তুমিও এখন দিব্যি অন্য কারো সংসার সাজাচ্ছো,নিঃশ্বাস ফেলার জো নেই। মাঝে মাঝে তোমার শহরে দমকা হাওয়ার সাথে বৃষ্টি আসে, আমার ঘরের ইলেকট্রিসিটিও চলে যায় তখন, চোখে জল না আসলেও দুজনেরই কান্না পায়,বুক ভাঙে, আমরা টের পাই,ছোট্ট একটা সংসার বুকের ভেতরেও সাজানো থাকে। সংসার © স্বপ্নীল চক্রবর্ত্তী
Sketch - Nilanjana Chakraborty Recitation - Arijit Banik Vocal - Padmamouliswar Aditya ছবি - নীলাঞ্জনা চক্রবর্তী উচ্চারন - অরিজিৎ বনিক কন্ঠ- পদ্মমৌলিশ্বর আদিত্য ছেড়ে চলে যাচ্ছো? যাও। ছেড়ে চলে যেতে নির্দিষ্ট কোনো কারনের দরকার হয় না,জানি। কিন্তু একসাথে দুজনেরই যেদিন ঘর বাধার অসুখ হয়েছিলো? সে অসুখটা সারিয়ে দিয়ে যাও। ছেড়ে যাচ্ছো যাও, আটকানোর আমি কে? কিন্তু যেদিন দিব্যি দিয়েছিলে, আমাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে যেনো তোমার মৃত্যু হয়? না না,তোমার মৃত্যু হোক আমি চাইছিনা,তুমি শুধু যাওয়ার আগে ওই দিব্যিটা ফিরিয়ে নিয়ে যাও। চলে যাচ্ছো যাও,যেতে বারণ করবোনা,করলেও তুমি শুনবে কেনো? শুধু আমাকে তোমার সাথে কাটানো সব সকাল দুপুর রাতের স্মৃতি ভুলিয়ে দিয়ে যাও। ছেড়ে চলে যাও, যাওয়ার আগে আমার দেয়া সবকটা চিঠি,আমার জেগে থাকা রাত, ধার করা ঘুম, একুশটা চুমু ফিরিয়ে দিয়ে যাও । ছেড়ে চলে যাবে? যাও । তোমাকে কখনো ঘৃণা না করেই বাঁচতে পারবো এমন কোনো ছোট্ট একটা কারণ বলে যাও। ছেড়ে তুমি চলে যেতেই পারো ; বুকের ভেতর শব্দ হলে হোক, চোখের শ্রাবণ মাসে কার কী আসে যায়; তুমি শুধু তোমার বলা সত্যি কথার মতো মিথ্যেগুলোকে অবিশ্বাস করা শিখিয়ে দিয়ে যাও। ছেড়ে চলে যাবে,যাও; পায়ের শব্দে চাপা পড়ে যাক অযুত-নিযুত দীর্ঘশ্বাস, তুমি শুধু আমার নেওয়া প্রতিটি দীর্ঘশ্বাসে তোমাকে আগলে রাখার অভিশাপ দিয়ে যাও। প্রস্থান © স্বপ্নীল চক্রবর্ত্তী
Sketch - Nilanjana Chakraborty Recitation - Arijit Banik Vocal - Padmamouliswar Aditya ছবি - নীলাঞ্জনা চক্রবর্তী উচ্চারন - অরিজিৎ বনিক কন্ঠ- পদ্মমৌলিশ্বর আদিত্য তুমি যখন ছেড়ে চলে যাচ্ছিলে,আমার বারবার মনে হচ্ছিলো তোমাকে ভুলে যাওয়ার চাইতে সহজ কিছু আর এই পৃথিবীতে নেই, অথচ ঘরে ফেরার পর দেখলাম আমার পুরো পৃথিবীটাকেই তুমি সাথে করে নিয়ে গেছো; তুমি ছেড়ে চলে যাওয়ার পর আমার ছাদের ছোট্টো বাগানটায় কখনো নয়নতারা ফোটেনি, দক্ষিনের জানালা দিয়ে রোদ ঢোকেনি নিয়মিত অভ্যাসে; তুমি ছেড়ে যাওয়ার পর অভ্যস্ত আদরের অভাবে আমার কখনো জ্বর ওঠেনি, তারাহুরো করে চায়ের কাপে চুমুক দিতে গিয়ে ঠোঁট পুড়ে যায়নি, অথচ আমি কী ভীষণভাবে চাইতাম আমার কোনো তীব্র অসুখ হোক; তুমি ছেড়ে চলে যাওয়ার পর পাঁচ বছরের ছোট্ট মেয়েটা আমার কাছে কখনো বেলী ফুলের মালা বিক্রি করতে আসেনি, রোদে দাঁড়িয়ে থাকতাম অথচ আমার আর কখনো মাথাব্যথা হয়নি, পার্কে কিছুক্ষন বসার জন্য আড়াল খুঁজতে হয়নি। তুমি ছেড়ে চলে গিয়েছিলে ঠিকই,অথচ তোমার অভাব আমাকে কখনো একা থাকতে দেয়নি। -প্রস্থানের পরবর্তীতে স্বপ্নীল চক্রবর্ত্তী