
বাংলা বছরের শেষ মাসের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তিতে পালিত হয় চড়ক পুজো। শিব আরাধনার এই পুজোয় এমন কিছু রীতি রয়েছে, যা মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। কুমিরের পুজো, জ্বলন্ত ছাইয়ের উপর হাঁটা, কাঁটাঝাঁপ, ছুরি বা ধারালো বঁটির উপর ঝাঁপ, অগ্নিনৃত্য ইত্যাদির মাধ্যমে এই পুজোয় দেবাদিদেব মহাদেবকে তুষ্ট করার প্রয়াস জারি থাকে।
শিব ধ্বংসের দেবতা। রুদ্রের আরাধনায় ভূতপ্রেত, পুনর্জন্মবাদ প্রভৃতি লোকবিশ্বাস জড়িয়ে রয়েছে চড়ক পুজোর সঙ্গে। মূলত সেই কারণেই নানা দৈহিক যন্ত্রণা ধর্মের অঙ্গ বলে মনে করে শিবভক্তের দল। চড়কগাছে লোহার হুড়কো দিয়ে বেঁধে দ্রুত গতিতে চাকার মতো ঘোরানো হয় কোনও কোনও ভক্তকে। পিঠ, হাত, পা, জিভ প্রভৃতি অঙ্গে লোহা গেঁথে দেওয়া হয়।
কিন্তু এইরকম ধর্মাচরণ ব্রিটিশের চোখে নৃশংস বলে পরিগণিত হয়। শ্বেতাঙ্গ সমাজ এই প্রথার বিরোধিতা করতে শুরু করে। আঠারোশো পঁয়ষট্টি খ্রিস্টাব্দে স্যর সিসিল বিডনের উদ্যোগে ব্রিটিশ সরকার আইন করে চড়ক উৎসবে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এতে অবশ্য শিব অনুরাগীদের সম্পূর্ণ দমিয়ে রাখা গেল না। তাদের কাছে এ উৎসব আত্মত্যাগ ও সহিষ্ণুতার প্রতীক। প্রতিবাদে শামিল হল ব্রিটিশ বিরোধী তরুণ সমাজ।
বর্তমানে বাংলার অনেক স্থানেই চিরাচরিত প্রথায় চড়ক উৎসব পালন করা হয়। বিশেষ করে কৃষিপ্রধান অঞ্চলগুলিতে এই চড়ক উৎসবের প্রভাব বেশি লক্ষ করা যায়। শহর কলকাতার কিছু এলাকাতেও চড়ক উৎসব হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছাতুবাবুর বাজার অর্থাৎ বিডন স্ট্রিট সংলগ্ন ডাকঘরের পাশে বসা চড়ক মেলাটি। ইতিহাসের নির্মম পরিহাস এই রাস্তাটি চড়ক বিরোধী স্যর সিসিল বিডনের নামাঙ্কিত।।
তথ্যসূত্র:বর্তমান পত্রিকা।
সূত্রধর: অর্ণব
Facebook:
https://facebook.com/EtiTomaderArnab
Insta:
https://instagram.com/eti_tomader_arnab
Youtube:
https://youtube.com/@etitomaderarnab8304