
স্বামীর মঙ্গল কামনা। বিপদ থেকে তাঁকে রক্ষা করা। ভাদ্র মাসের প্রথম ১৫ দিন তাই স্বামীর মুখ দেখবেন না নববধূরা। যে কারণে তাঁরা বিয়ের পর প্রথম ভাদ্রমাস আসার আগেই শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ি চলে যান। দুই বাংলার উত্তরাঞ্চলে, বিশেষ করে বাংলাদেশের এই লোকাচার ‘ভাদর কাটানি’ নামে পরিচিত।
শ্রাবণের শেষ সপ্তাহে পায়েস, নানা স্বাদের পিঠে-পুলি, মিষ্টি ও ফলমূল নিয়ে মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি থেকে আনতে যান বাপের বাড়ির লোকজন। মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজনও সাধ্যমতো চেষ্টা করেন বউমার বাপের বাড়ির আত্মীয়দের সমাদর করার। আবার ভাদর কাটানি শেষ হলে বধূকে বাপের বাড়ি থেকে ফিরিয়ে আনতে যান শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সঙ্গে থাকে বিভিন্ন উপহার। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ভাদর কাটানির কোনও ব্যখ্যা না থাকলেও এ অঞ্চলের আদি প্রথা অনুযায়ী এই উৎসবটি যুগ যুগ ধরে পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, রংপুর, দিনাজপুর অঞ্চল এবং পশ্চিমবঙ্গের দুই দিনাজপুর, মালদহ, জলপাইগুড়ির কোনও কোনও অংশে এই প্রথা আজও চালু রয়েছে। পাছে নববধূর মুখ দেখলে স্বামীর অমঙ্গল হয়! প্রচলিত ভাদর কাটানি প্রথাটি যুগ যুগ ধরে এ অঞ্চলের হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে চালু রয়েছে। ভাদর কাটানি এক সময় সম্ভ্রান্ত হিন্দু সম্প্রদায় ঘটা করে পালন করত। তাদের এই রেওয়াজ ক্রমেই ওই অঞ্চলের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকেও প্রভাবিত করে। পরে উৎসবটি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সংস্কৃতির একটি অংশ হয়ে দাঁড়ায়। নববধূরা লোকাচারকে কেন্দ্র করে বাপের বাড়িতে কিছুদিন থাকার সুযোগ পান। মেয়ে ঘরে ফেরার আনন্দই যে আলাদা!
তথ্যসূত্র:বর্তমান পত্রিকা।
সূত্রধর: অর্ণব
Facebook:
https://facebook.com/EtiTomaderArnab
Insta:
https://instagram.com/eti_tomader_arnab
Youtube:
https://youtube.com/@etitomaderarnab8304