
হাওড়া-কালকা মেল তখন সবচেয়ে দ্রুতগামী ট্রেন। যদিও তার সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের বেশি ওঠে না। তদানীন্তন রেল বোর্ড তাই আরও উচ্চগতির ট্রেনের কথা ভাবছে। এমন এক ট্রেন, যার গতি ওঠানো যাবে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত। পরের পর বৈঠক হচ্ছে, চায়ের কাপে তুফান উঠছে। সিদ্ধান্ত হল, আরও উচ্চ গতিতে ট্রেন চালানোর ব্যাপারে একটি সমীক্ষা হবে। সেটা ১৯৬০ সাল। এরপর একের পর এক মত, বিরুদ্ধ মত। অবশেষে সেই সমীক্ষা রিপোর্ট জানাল, সম্ভব। সাত বছর পর, ১৯৬৭ সালে হাওড়া-নয়াদিল্লি রুটে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিমি গতিতে চলতে পারে, এমন ট্রেনের ট্রায়াল রান শুরু করল রেল বোর্ড।
আনুষ্ঠানিকভাবে রাজধানী এক্সপ্রেসের আত্মপ্রকাশ অবশ্য আরও দু’বছর পর। ১৯৬৯ সালের ১ মার্চ। ওইদিন নয়াদিল্লি থেকে হাওড়ার উদ্দেশে প্রথম রওনা দিয়ে ছিল রাজধানী এক্সপ্রেস। ৩ মার্চ ট্রেনটি হাওড়া থেকে নয়াদিল্লির উদ্দেশে রওনা দেয়। দেশের সবচেয়ে অভিজাত যাত্রীবাহী ট্রেন পরিচালনার পালক জুড়ল পূর্ব রেলের মুকুটে। সেসময় অবশ্য দ্বি-সাপ্তাহিক ছিল রাজধানী এক্সপ্রেস। তখন যদিও আইসিএফ কোচ। আধুনিক এলএইচবি নয়। শিয়ালদহ-নয়াদিল্লি রুটে রাজধানী এক্সপ্রেসের জন্য আম বাঙালিকে অবশ্য অপেক্ষা করতে হয়েছে আরও ৩১ বছর।
প্রথম রাজধানী এক্সপ্রেস চালুর ‘জন্মদিন’ গেল সদ্যই। এখন অবশ্য নরেন্দ্র মোদির সাধের বন্দে ভারত এক্সপ্রেস নিয়ে মাতামাতি শুরু হয়েছে। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬০ কিমি গতিতে ছুটতে পারা এই ট্রেনকে দেশের প্রথম সেমি-হাইস্পিড ট্রেনের তকমাও দেওয়া হয়েছে। আমজনতা বন্দে ভারত নিয়ে মাতামাতিও করছে। কিন্তু রাজধানী এক্সপ্রেসের জনপ্রিয়তা কমেনি একফোঁটাও। অন্তত রেলের বিভিন্ন সময়ের ‘অকুপেন্সি রেট’ই তার প্রমাণ। বছর পঞ্চান্ন আগেই রাজধানী এক্সপ্রেস তার সর্বোচ্চ গতি তুলে ফেলেছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটারে। ১ হাজার ৪৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছিল ১৭ ঘণ্টা ২০ মিনিট সময়ে। নস্টালজিয়ায় মাখামাখি হয়েও রাজধানী এক্সপ্রেস তাই এখনও দূরের জার্নির অন্যতম ভরসার ট্রেন। বর্তমানে যার সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার।
তথ্যসূত্র:বর্তমান পত্রিকা।
সূত্রধর: অর্ণব
Facebook:
https://facebook.com/EtiTomaderArnab
Insta:
https://instagram.com/eti_tomader_arnab
Youtube:
https://youtube.com/@etitomaderarnab8304