
বহুযুগ আগের কথা। সারা ভারতের অধিকাংশ জায়গাতেই তখন দাপিয়ে বেরাচ্ছে পালকি। তবে শুধু অভিজাতদের জন্যই ছিল এই পালকি। খরচ অপেক্ষাকৃত কম বলে মধ্যবিত্তদের যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে পালকি বা ডুলি। অষ্টাদশ শতকের শেষ থেকে আমাদের কলকাতাতেও যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম হয়ে ওঠে এই পালকি-ডুলি। বিয়ের সময়ওবর-কনে এই পালকি ব্যবহার করত। ‘পালকি’ শব্দটি মূলত সংস্কৃত ‘পল্যঙ্ক’ বা ‘পর্যঙ্ক’ থেকে উদ্ভূত। পালি ভাষায় এর নাম ‘পালাঙ্কো’। বড় পালকিগুলি বহন করত চার থেকে আট জন। আবার ডুলি বহন করতে লাগত মাত্র দু’জন। মূলত, দুলে-হাড়ি-বাগদিদের মতো নিম্নবর্গের মানুষরাই এই বহনের কাজ করত। তবে পরে বাঙালি বাহকদের জায়গায় জাঁকিয়ে বসে ওড়িশা ও বিহারের পালকি বাহকরা।
মূলত, এদেশীয় লোকেরা পালকি চাপলেও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাবুরাও মাইনে দিয়ে বেহারা রাখত। যেহেতু এই পালকির সঙ্গে সম্মান ও পদমর্যাদার প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে, তাই কোম্পানির ছোটকর্তাদের পালকি-বেহারা রাখতে নিষেধ করা হতো। ইতিহাস বলছে, এই সময় থেকে ঘোড়ার গাড়ির ব্যবহার শুরু হলেও পালকির চাহিদা কমেনি, বরং বেড়েছে। পুজোর দিনে বাঙালি সম্ভ্রান্ত ঘরের মেয়ে-বউরা পালকি চেপে গঙ্গাস্নানে যেত। এরপর তাদের লোকচক্ষুর আড়ালে রাখতে পালকিসুদ্ধ জলে চোবানো হতো। জানা যায়, ১৮৫০ সালে একজন উড়িয়া পালকি বাহকের মাইনে ছিল মাসে ৪ টাকা। বিহারি পালকি বাহকের মাইনে ছিল মাসে ৫ টাকা। এই সময় পালকি ভাড়ায় নিলে খরচ হতো ১ টাকা ৪ আনা। সেসময় বেহারাদের মাইনে ছিল মাসে ২৫ টাকা। এক মাসের জন্য পালকি ভাড়া নিলে খরচ পড়ত ৩৭ টাকা।
তথ্যসূত্র:বর্তমান পত্রিকা।
সূত্রধর: অর্ণব
Facebook:
https://facebook.com/EtiTomaderArnab
Insta:
https://instagram.com/eti_tomader_arnab
Youtube:
https://youtube.com/@etitomaderarnab8304